Type Here to Get Search Results !

অভিমানে কী রবে দূরে (পার্ট_১)


 ছোটবেলা থেকেই আমি খুবই ইনোসেন্ট, বোকা স্বভাবের। মা বাবা যা বলে তাই শুনি। তারা হ্যা বললে হ্যা আর না বললে না। 

তাতে আমার বরাররই কোনো অসুবিধা নেই। এক কথায় তাদের বাধ্য গত সন্তান।আমার নাম আয়ান। 


 মা বাবার একমাত্র সন্তান হওয়ার কারনে তারা কোনো সময়ই আমার কোনো চাওয়া অপুর্ন রাখেনি। 


আমি পড়াশোনাতেও খুব ভালো। ক্লাসে সবসময় প্রথম ছাড়া দ্বিতীয় হইনি। এজন্য পাড়াপ্রতিবেশি আত্মীয় স্বজন সবাই খুব ভালোবাসে আমায়।  


একদিন স্কুল শেষ করে বন্ধু দের সাথে বাসায় ফিরছিলাম। হঠাৎ রাস্তায় আমার বড় মামার সাথে দেখা। 


মামা, মামি আর আমার মামাতো বোন নেহাকে নিয়ে আমাদের বাড়িই আসছিল।নেহাও আমার মত বোকা স্বভাবের। 

হ্যাবলা মেয়েটা অনেক বড় হয়ে গেছে দেখলাম। যাই হক আমি আর কিছু বললাম না। মামার সাথে সবাইকে নিয়ে

 বাসায় আসলাম।

এসে দেখি মা রান্না করছে।ওদেরকে দেখে খুব খুশি হলো মা কারন ওরা প্রায় তিন বছর পর আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। 

মা ওদেরকে নাস্তা দিলো। মামি আমাকে ডেকে কাছে বসিয়ে বললেন বাবা আমাদের সাথে নাস্তা করো। 


আমি একটু লজ্জা পেয়ে বললাম না আমি করছি নাস্তা। বলেই বেরিয়ে গেলাম বন্ধুদের সাথে খেলতে। 


নেহা এবার ক্লাস এইটে পড়ে। কিন্তু দেখতে মাশাল্লাহ পরি। ওর দিকে তাকালে কেন জানি চোখ আর ফিরতে চায় না


 তবুও জোর করে চোখটা ওর থেকে নামিয়ে রাখি। আমার খালাতো ভাই ইমন আবার ওকে খুব পছন্দ করে। শুনেছি মামার মোবাইল দিয়ে ওরা মাঝে মধ্যে মেসেজে কথাও বলে। 

কিন্তু আমার মতে নেহা এসবের কিছু বুঝে না। পিচ্চি মাইয়া একটা।আমার যে ওকে ভালো লাগে না তা না।যে একবার ওকে দেখবে সেই ওর প্রেমে পড়ে জাবে ও এতটাই মায়াবী। 


 আমারও ওকে খুব ভালো লাগে কিন্তু কখনো বলে উঠতে পারি নি। তবে ইচ্ছে আছে ওকে বিয়ে করার। দুইদিন পর মামা মামি নেহাকে নিয়ে চলে গেল।


আমার ওই কয়টা দিন কিছুই ভালো লাগত না। মন বারবার শুধু নেহাকে দেখতে চাইত।তবুও মনকে বুঝিয়ে আটকে রাখলাম। 

দেড় মাস পর,আমার এক খালাতো বোনের ছেলের সুন্নতে খাৎনার অনুষ্ঠানে জাই, আমি আর ইমন খেতে বসব, তখন দেখি নেহা যাচ্ছে।

 ওকে দেখে বুকের মধ্যে কেমন জানি মোচড় দিয়ে উঠলো।ইমন তো বলেই ফেলল দ্যাখ,মামাতো বোন আসছে। 

ওর ওপর আমার খুব রাগ হতে লাগল। এজন্য হয়ত মানুষ প্রিয় জিনিসের ভাগ দিতে চায় না। যাই হক, খেতে যেহেতু গেছি না খেয়ে তো আর নেহার পিছনে ছুটতে পারি না সাথে আবার ইমনও আছে।

 ইমন আর আমি খেতে বসলাম। খাওয়া শেষ করে মনটা ছটফট করতে লাগল নেহাকে দেখার জন্য। দৌড়ে গেলাম ঘরে। 

দেখি নেহা আপুদের সঙ্গে বসে আছে। মন ভরে ওকে দেখলাম। শান্তি অনুভুত হলো মনের মধ্যে। তারপর ও বাড়ি চলে গেল আমিও বাড়ি চলে এলাম।

ইমন বলল নেহা নাকি ওকে মেসেজ দিছে শুনে খুব রাগ হতে লাগল। 

তিনদিন রাগ পুষে রাখার পর দেখি নেহা আমাকে ফেন্ড রিকুয়েষ্ট দিছে। আমি একসেপ্ট করতেই মেসেজ দিলো ও।আমি উত্তর দিয়ে কিছুক্ষন চুপ রইলাম। 

তারপর ইমনের ওপরের রাগটা ওর ওপর ঝাড়লাম। আরও অনেক বকাবকি করার পর বললাম তুমি আর আমাকে মেসেজ দিবে না। 



ও তারপর দুইমাস আমাকে মেসেজ দেয়নি। 


তারপর আবার আমার সাথে কথা বলতে আসে আমারও খুব ইচ্ছে ছিল ওর সাথে কথা বলার কিন্তু বলিনি তখন এই ভয়ে যে ওর আর আমার মধ্যে কিছু হলে মা বাবা আর মামা মাামি কষ্ট পাবে।

আবার ওকে বকাবকি করে তাড়িয়ে দেই। নেহা সেইদিন কান্না কাটি করে অনেক তবুও আমি কঠোর ছিলাম। 


তারপর বহুদিন কেটে যায় নেহা আর ফিরে আসে নি আমার কাছে। এক বছর হয়ে গেছে ওকে আমি দেখিনি। যেই মানুষ টাকে ছোট বেলা থেকে ভালোবাসি তার সাথে এমন টা করা উচিত হয়নি বারবার এটাই মনে পড়তে থাকে আমার। তারপর দেখতে দেখতে তিন বছর পার হয়ে গেল।


আমি আর পাড়লাম না ওকে মেসেজ দিয়েই ফেললাম।

 নেহা সাত ঘন্টা পর মেসেজ টা সিন করলো তারপর রিপলে দিলো।আমি সব ভুলে ওকে বিয়ের প্রস্তাব টা দিয়েই ফেললাম। 

ও তখন আমাকে খুবই বিনয়ের সাথে না বলে দিল।আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো। মনে হলো কেন তিন বছর আগে ওর সাথে এমনটা করছিলাম। হয়ত কোথাও ওর সেই কষ্ট টা এখনও ওকে কাদায় তাই ও আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। আমি ওকে ছাড়া আজ শুন্য। সব থেকেও যেন কিছু নেই।

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.